খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ ভাদ্র, ১৪৩১ | ৩০ আগস্ট, ২০২৪

Breaking News

  বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪
  বৃষ্টিতে ভেসে গেল প্রথম দিনের খেলা
  মুন্সিগঞ্জ শেখ হাসিনাসহ ৬১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
কোটাবিরোধী আন্দোলন

রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ি: ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন, গুলিতে নিহত ১

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিতে সিয়াম (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মৃত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিয়ে আসেন কয়েকজন। পরে তার মরদেহ হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে গিয়ে অটোরিকশায় করে নিয়ে চলে যান তারা।

সিয়ামের খালাতো ভাই রাসেল বলেন, সিয়াম গুলিস্তানের একটি ব্যাটারির দোকানের কর্মচারী। রাতে বাসায় ফেরার পথে হানিফ ফ্লাওয়ারে সংঘর্ষ চলাকালে সে গুলিবিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিয়াম মারা যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলেও আমরা আর ভেতরে ঢুকিনি। মরদেহ অটোরিকশায় করে বাসায় চলে যাচ্ছি।

তিনি জানান, সিয়ামের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে। বর্তমানে সে মাতুয়াইলে থাকতো।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারে গুলিতে এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নিয়ে আসেন স্বজনরা। পরে তারা বুঝতে পারেন যে, সিয়াম মারা গেছে। এ জন্য তারা আর হাসপাতালের ভেতরে না ঢুকে মরদেহ নিয়ে চলে যান।

এর আগে রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় শনিরআখড়ার কাজলায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলের পাশেই ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ছিল। তবে পুলিশ জায়গাটির নিয়ন্ত্রণ না নেওয়া পর্যন্ত আগুন নেভাতে পারছিল না ফায়ার সার্ভিস।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানা থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত মহাসড়ক বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ও সিএনজি পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকরীরা। এর আগে যাত্রাবাড়ী থানায় হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয়রা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা ও একটি পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া একাধিক মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। প্রচণ্ড শব্দ ও ধোঁয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ছররা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের অনেকে বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন।

পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হয়ে ছয়জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে দুই বছর বয়সী শিশুও রয়েছে।

আহত শিশুর মা বলেন, পুলিশের রাবার বুলেট ও হইহট্টগোলে শিশুটি বাসায় কান্না করছিল। কান্না থামাতে শিশুটির বাবা বাবলু মিয়া সন্তানকে নিয়ে বাইরে আসেন। সেই সময় পুলিশের ছররা গুলি বাড়িটির কলাপসিবল গেটের ভেতরে ঢুকে যায়। এতে বাবা-ছেলে দুজনেই আহত হন। তৎক্ষণাৎ তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান।

এদিকে ঢামেকে পুলিশের রাবার বুলেটে আহত আরও একজনকে নিয়ে আসা হয়। তার নাম ফয়সাল বলে জানা গেছে। তার গায়ে রাবার বুলেটের অসংখ্য আঘাত রয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঢামেক সূত্র জানায়, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াস ও কাপড় ব্যবসায়ী মনিরুলকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনির আখড়ার পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পোস্তগোলা থানার সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহিন আলম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট হানিফ ফ্লাইওভারের দিকে গেলেও সংঘর্ষ চলায় তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। কিছু সময় পরে এমনিই আগুন নিভে যায়। টোল প্লাজা বন্ধ থাকায় হানিফ ফ্লাইওভারে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

খুলনা গেজেট/কেডি/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!